Wellcome to National Portal
কৃষি তথ্য সার্ভিস (এআইএস) গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার
Text size A A A
Color C C C C

ছাগল পালনে মাচা ব্যবহারের গুরুত্ব ও পাকস্থলীর পাতাকৃমি

ছাগলকে গরিবের গাভী বলা হয়। গরিব-অসহায় মানুষ ছাগল পালন করে বাড়তি আয় করে থাকেন। ছাগল গরিবের আপদ-বিপদের বন্ধু। ছাগল পালন করতে তেমন খাদ্য খরচ নেই।
দেশে দুধ, ডিম ও পোলট্রির উৎপাদন দ্রুত বৃদ্ধি পেলেও প্রযুক্তিগত জ্ঞানের অভাবে ছাগলের উৎপাদন তেমন বৃদ্ধি পায়নি। মাচার ওপর ছাগল পালন বিষয়ে চাষিদের যথেষ্ট জ্ঞান থাকা দরকার। ছাগল পালনের বিশেষ দিকগুলো হচ্ছে- উপযুক্ত বাসস্থান, উপযুক্ত খাদ্য, প্রজনন, স্বাস্থ্য ও বাজার ব্যবস্থাপনা।


বাসস্থান : ছাগল সাধারণত পরিষ্কার শুষ্ক, দুর্গন্ধমুক্ত উষ্ণ, পর্যাপ্ত আলো ও বায়ু চলাচলকারী পরিবেশ বেশি পছন্দ করে। অপরিষ্কার, স্যাঁতস্যঁতে, বদ্ধ, অন্ধকার ও পুঁতিগন্ধময় পরিবেশে ছাগল বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয়। যেমন- নিউমোনিয়া, একথিওমা, পিপিআর, ডায়রিয়া, চর্মরোগ, উকুন ইত্যাদি, অপর দিকে ছাগলের উৎপাদন কমে যায়।


পূর্ব-পশ্চিম লম্বালম্বী দক্ষিণ দিকে খোলা স্থানে ঘর তৈরি করতে হবে। খামারের তিন দিকে ঘেরা পরিবেশ বিশেষ করে উত্তর দিকে গাছপালা লাগাতে হবে। এ ক্ষেত্রে কাঁঠাল, ইপিল ইপিল, কসভা, ডেউয়া ইত্যাদি গাছ লাগানো যেতে পারে, যার পাতা ছাগল খায়। 
সেমি-ইন্টেনসিভ পদ্ধতিতে ছাগলকে সাধারণত ১৪-১৬ ঘণ্টা সময় ঘরে আবদ্ধ রাখা হয়। এ জন্য প্রতিটি ছাগলের জন্য গড়ে প্রায় ৮-৯ বর্গফুট জায়গা প্রয়োজন, অর্থাৎ ১৬ ফুটত্র১২ ফুট ঘরে ২০টি ছাগল পালন করা যায়।

 

মাচা তৈরি : ছাগলের ঘর যে ধরনের হোক না কেন ঘরের ভেতরে বাঁশ বা কাঠের মাচা তৈরি করে তার ওপর ছাগল রাখতে হবে। একটি মাচা তৈরি করতে ১৫০-২০০ টাকা খরচ হয়। বিভিন্নভাবে ছাগলের মাচা তৈরি করা যায়। বাঁশের বাতা দিয়ে চকির মতো করে করা যায়। আবার বাঁশের বাতা মোটা সুতা দিয়ে বুনিয়ে ফোল্ডিং (Folding) মাচা তৈরি করা যায়, যা রাতে ছাগলের জন্য ব্যবহার করে  সকালে মুড়িয়ে/গুটিয়ে উঠিয়ে রাখা যায়। কম জায়গায় ফোল্ডিং মাচা ব্যবহার করা সুবিধাজনক। কাঠের চকিও মাচার বিকল্প হিসেবে ব্যবহার করা যায়। মাচার উচ্চতা ১.৫ মিটার (৫ ফুট) এবং মাচা থেকে ছাদের উচ্চতা ৬-৮ ফুট হতে হবে। গোবর ও প্রস্রাব পড়ার সুবিধার্থে বাঁশের চটা বা কাঠকে ১ ইঞ্চি ফাঁকা রাখতে হবে। মাচার নিচে থেকে সহজে গোবর ও প্রস্রাব সরানোর জন্য ঘরের মেঝে বরাবর উঁচু করে দুই পাশে ঢালু (২%) রাখতে হবে। মেঝে মাটির হলে সেখানে পর্যাপ্ত বালু মাটি দিতে হবে। ছাগলের ঘরের দেয়াল, মাচার নিচের অংশ ফাঁকা এবং মাচার ওপরের অংশ এম এম ফ্ল্যাক্সিবল নেট হতে হবে। শীতকালে রাতে মাচার ওপর দেয়াল চট দিয়ে ঢেকে দিতে হবে। শীতের সময় মাচার ওপর ৪-৫ ইঞ্চি পুরু খড়ের বেডিং বিছিয়ে দিতে হবে।
প্রতিদিন মাচা পরিষ্কার করতে হবে। সপ্তাহে ১ দিন জীবাণুনাশক ওষুধ স্প্রে করতে হবে। ভেঙে গেলে সাথে সাথে মেরামত করতে হবে। মাচা শক্ত ও মজবুত হতে হবে।

মাচায় ছাগল পালনের সুবিধাসমূহ : ১. সর্দি-কাশি, নিউমোনিয়া রোগ হবে না, ২. কৃমি, উকুন, চর্মরোগ কম হবে। ৩. প্রস্রাব, গোবর সাথে সাথে নিচে পড়ে যায়। ফলে শরীর পরিষ্কার থাকে। ৪. শীতকালে ঠাণ্ডা কম লাগে, ৫. মাচার ওপর ও নিচ দিয়ে বাতাস চলাচল করে বিধায় মাচা শুকনো থাকে,যা ছাগলের জন্য আরামদায়ক। ৬. সর্বোপরি ছাগলের স্বাস্থ্য ভালো থাকে ও উৎপাদন বৃদ্ধি পায়।


ছাগলকে পরিমাণ মতো দানাদার খাদ্য ও ঘাস, লতা-পাতা দিতে হবে। উকুন, মেঞ্জ নিধন করতে হবে। ৪ মাস পরপর কৃমিনাশক সেবন করাতে হবে। ৬ মাস পরপর PPR রোগের টিকা প্রয়োগ করতে হবে। ওলান পাকা রোগ প্রতিরোধ করতে হবে। প্রজনন করানোর জন্য একটি পাঠা এক এলাকায় ২ বছরের বেশি ব্যবহার করা যাবে না।
তথ্য সূত্র : ১. দেশি ছাগল পালন- BLRI, সাভার, ঢাকা।

পাকস্থলীর পাতাকৃমি (Paramphistomes, Rumen fluckes, Conical fluckes) : বিশ্বব্যাপী বিভিন্ন প্রজাতির পাকস্থলীর পাতাকৃমি দ্বারা গবাদিপ্রাণি আক্রান্ত হয়ে থাকে। প্রাপ্ত বয়স্ক এ কৃমি দেখতে গোলাপী-লাল বর্ণের এবং আকার নাশপাতির মতো। ১৫ এমএম পর্যন্ত লম্বা হয়, যা রুমেন ও রেটিকুলামের দেয়ালে লেগে থাকে।


অপ্রাপ্ত বয়স্ক কৃমি ১-৩ এমএম পর্যন্ত লম্বা হয়, যা ডিউডেনামে অবস্থান করে। ইলিয়ামের (ileal musosal) দেয়ালে কৃমি শোষক দ্বারা আটকিয়ে থাকার কারণে মারাত্মক অন্ত্রপ্রদাহ এবং রক্তপাত ঘটিয়ে থাকে।
প্রাপ্ত বয়স্ক কৃমি স্পষ্টত তেমন রোগ লক্ষণ তৈরি করে না, কিন্তু খুব বেশি পরিমাণে কৃমির অবস্থান অবশ্যই প্রতিরোধ করতে হবে। সাধারণত গরু বেশি আক্রান্ত হয়। মারাত্মকভাবে আক্রান্ত হলে মৃত্যুর হার ৯০%। অতিরিক্ত মৃত্যুর হার দেখে এ রোগ নির্ণয় করা যায়। পাকস্থলীর পাতাকৃমির নাম চধৎধসঢ়যরংঃড়সঁস ঈবৎার গ্রীষ্ম, শরৎ ও শীতকালের আগের সময়ে এই কৃমি আক্রমণ বেশি হয়ে থাকে। ওই সময়গুলোতে ঈবৎপধৎরধব দ্বারা ঘাস সংক্রামিত হয়ে থাকে।


সব বয়সে গরু, ছাগল, ভেড়া এবং অন্য রোমন্থনকারী প্রাণী আক্রান্ত হয়। তবে ১ বছরের কম বয়সের প্রাণী কম আক্রান্ত হয়। ট্রপিক্যাল ও সাবট্রপিক্যাল দেশে এ কৃমি সংক্রমণ বেশি হয়। বাংলাদেশে প্রায় ৭০-৯০% গরুর দেহে পাকস্থলীর পাতাকৃমি পাওয়া যায়।


জীবন চক্র : আক্রান্ত পশুর মলের সাথে কৃমির ডিম বেরিয়ে আসে। মাটিতে ডিম থেকে মিরাসিডিয়াম বের হয়। এ মিরাসিডিয়াম কয়েক প্রকার শামুকে প্রবেশ করে। শামুকের মধ্যে স্পোরোসিস্ট রেডিয়া এবং পরে সারকারিয়ায় পরিণত হয়। এ সারকারিয়ার সম্মুখে ও পেছনে একটি করে সাকার থাকায় একে এম্ফিস্টোমও বলে। এ সারকারিয়া শামুক থেকে বের হয়ে জলজ উদ্ভিদ, ঘাস ইত্যাদিতে লেগে যায় এবং মেটাসারকারিয়ায় পরিণত হয়।


সংক্রামিত ঘাস খাওয়ার মাধ্যমে এ মেটাসারকারিয়া অন্ত্রে চলে যায় এবং সেখানে পুনরায় সারকারিয়া বের হয়। সারকারিয়া অন্ত্রের ক্ষুদ্রান্তে ৩-৫ সপ্তাহ অবস্থান করার পর রোটকুলাম হয়ে রুমেনে পৌঁছে ও সেখানেই স্থায়ীভাবে অবস্থান করে। ৭-১৪ সপ্তাহ বয়সে তারা ডিম পাড়ে।


লক্ষণ : আক্রান্ত প্রাণীর ক্ষুধামন্দা, ঘনঘন শ্বাস-প্রশ্বাস, পানিশূন্যতা, উদাসীনভাব, চলাফেরায় দুর্বলতা, মারাত্মক পাতলা পায়খানা দেখা দেয়। থুতলির নিচে পানি জমা হতে পারে। মিউকোজা ফ্যাকাশে দেখাবে। ছোট বাছুর ও ভেড়া আক্রান্ত হয়ে মারা যেতে পারে ও বিশেষ করে লক্ষণ দেখা দেয়ার ১৫-২০ দিন পর মারা যায়।
প্রাপ্ত বয়স্ক কৃমি আক্রমণের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ ক্ষমতা গড়ে তুলতে পারে।


দীর্ঘমেয়াদি সংক্রমণের ক্ষেত্রে পশুর ওজন কমে যায়, রক্তশূন্যতা চামড়া শুকিয়ে যায়, উৎপাদন কমে যায়, পশুর থুতনির নিচে পানি জমা হয়। এভাবে রোগ ভোগের কিছু দিন পর আক্রান্ত পশুর মৃত্যু ঘটতে পারে অথবা ধীরে ধীরে সেরে ওঠতে পারে।


রোগ নির্ণয় : রোগ লক্ষণ ও অনুবীক্ষণ যন্ত্রের সাহায্যে পশুর মল পরীক্ষা করলে বড় আকারের পরিষ্কার, স্বচ্ছ, অপারকুলামযুক্ত ডিম দেখা যাবে। কিন্তু মারাত্মক আকারের ক্ষেত্রে মল পরীক্ষা করে ডিম নাও পাওয়া যেতে পারে। Fluid feces পরীক্ষা করলে অপ্রাপ্ত কৃমি পাওয়া যাবে। মৃত প্রাণীকে ময়নাতদন্ত করে রোগ নিশ্চিত হওয়া যায়।
 

চিকিৎসা : ১. Niclosamid = ১০ mg/kg, Bithional = ২৫ mg/kg - শুধুমাত্র ভেড়ার ক্ষেত্রে কার্যকর।
২. গরুর ক্ষেত্রে -
Resorantul = ৬৫ mg/kg Oxyclozanid দিয়ে চিকিৎসায় প্রাপ্ত ও অপ্রাপ্ত বয়স্ক কৃমিতে ৯০% কার্যকরি।
৩. Carbontetrachlorid এবং Hexachlorlethane -শুধু প্রাপ্ত বয়স্ক কৃমির বিরুদ্ধে কার্যকর।
৪. ভেটেরিনারি ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে চিকিৎসা করানো উচিত।

 

প্রতিরোধ : ১. যেসব এলাকায় প্রতি বছর পাকস্থলীর কৃমি সংক্রমণ ঘটে, সে এলাকায় নিয়মিত চিকিৎসা দিতে হবে, যাতে করে প্রাপ্ত বয়স্ক কৃমি ধ্বংস হয়ে যায়।
২. নিচু জলা ভূমি থেকে পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা করতে হবে এবং শামুক নিধনের ব্যবস্থা করতে হবে (Molluscicides).
Refer  তথ্য সূত্র :

1. The Merck net. Manual.
2. The Veterinary Medicine - Dc. Blood

 

কৃষিবিদ ডা: মনোজিৎ কুমার সরকার

উপজেলা প্রাণিসম্পদ অফিসার, গাইবান্ধা সদর, গাইবান্ধা; মোবাইল : ০১৭১৫২৭১০২৬


COVID19 Movement Pass Online Police Clearance BD Police Help line Expatriate Cell Opinion or Complaint NIS Bangladesh Police Hot Line Number Right to Information PIMS Police Cyber Support for Women BPWN Annual Training Workshop Achievement & Success PHQ Invitation Card
Press Release Recruitment Information Procurement / Tender Notice Legal Instrument Innovation Corner Detective Magazine Bangladesh Football Club Diabetes-Covid19 Exam Results Accident Info Important Forms

Apps

icon icon icon icon icon icon